বিবাহ পরবর্তী অনর্থক ভীতিমুলক পাঁচটি ভুল চিন্তা।

ভূমিকা। 

বিবাহ নিয়ে ভয় একথা মোটেও ঠিক নয় বরং বিবাহর পরে জয় একথাই পরিপূর্ণভাবে সত্য । বিবাহ পরবর্তী ভীতির যে কথাগুলো বলা হয় তা কোনো রকম সভ্য সংস্কৃতি থেকে, কোনো ভাল মানুষের লেখা থেকে , বা  কোনো  উত্তম অভিজ্ঞতা থেকে আসা নয়।  বরং এগুলো ঘুনে ধরা, নষ্ট হয়ে যাওয়া,  ফেলে দেওয়া  অসভ্য সংস্কৃতি আর আকাশ সংস্কৃতির ভয়ানক থাবা ছাড়া আর কিছুই নয়। যা  যুবসমাজকে ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার অশুভ আর ভয়ানক ষড়যন্ত্র ।  

তাই এসকল ভয় যে, অনর্থক ও ভিত্তিহীন তা নিম্নের ছোট্ট প্রবন্ধে  তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

১. স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার ভয় ?   

বাস্তবে  বিবাহিত জীবন দুজন মানুষের মধ্যে প্রচুর স্বাধীনতা নিয়ে আসে এবং আজেবাজে চিন্তা , খারাপ মনলিপ্সা কে দূর করে এবং দুজনের মাঝে আনন্দময় মিলবন্ধন স্বাধীনতাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।  স্বাধীনতাকে খর্ব করার যে ধারণা এটা অবশ্যই পশ্চিমা সংস্কৃতির  নোংরা উপাদান।  যা পবিত্র বিবাহিত জীবন থেকে তরুণ-তরুণীদের দূরে রেখে স্বাধীনতার নামে অসভ্য অবাধ  যৌনাচারের  প্রতি তাদেরকে আগ্রহান্বিত করার সাজানো ষড়যন্ত্র মাত্র ।  এসব চিন্তাধারা শুধু ইসলামই নয় অন্যান্য সভ্য সংস্কৃতির জন্যও  বড় ধরনের হুমকি তাই বিবাহ করুন স্বাধীনতা হারানোর কোন ভয় নাই বরং স্বাধীনতা পাওয়ার রাস্তা খুলে যাবে। অন্যথায় শুধু স্বাধীনতা নয় সুন্দর সুঠাম দেহও চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে ।  

২. সন্তান লালন-পালনের ভয় ? 

 না মিথ্যে;  এটা কোন ভয় নয়।  আপনি সন্তান ছিলেন, আপনার পিতা মাতা সন্তান ছিল, পৃথিবীর বাবা “আদম” আর মা  “হাওয়া” ছাড়া সবাই সন্তান ছিল।  সেই সন্তানের ধারাবাহিকতায় আপনি আমি সবাই সন্তান এবং আপনার স্বামী স্ত্রীর মাধ্যমে যারা হবে তারাও সন্তান।  সন্তান লালন পালন কে কেউ  কখনোই ভীতিকর মনে করে নাই।   বরং এটা জীবনের অন্যতম আনন্দের অধ্যায় ।  বরংচ বিবাহের পর যারা সন্তানহীন থাকে তাদের জীবন তাদের কাছে অনেক সময়ই নিরর্থক মনে হয়।  তাই সন্তানের  পালনকে  যারা অনর্থক ভীতিমূলক মনে করে তারা সভ্য  সংস্কৃতির ধারে কাছেও নেই।  তারা মানুষ নামের বনমানুষ।  তারা সন্তান সন্ততি পরিবার ও সমাজকে কলুষিত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় লিপ্ত।  সন্তানের কাছে বাবা মা ডাক শোনা প্রতিটি দম্পতির  জীবনের অন্যতম মায়াময় অনুভূতি।  তাই সন্তান-সন্ততিকে ভেজালের মনে নাকরে,  ভয়ের মনে নাকরে পূর্ণতার মনে করুন।  তাহলে দেখবেন সঙ্গীময় বিবাহিত জীবন সুন্দর হবেই। আর সন্তান লালন পালন এই জীবনে  আনন্দকে আরও  লক্ষ কোটি গুণ বাড়িয়ে দিবে। 

৩. বন্ধুত্ব হারানোর ভয় ? 

 না কখনোই নয়, বিবাহিত জীবন কখনোই বন্ধুত্বে  বাধা দেয় না।  বরংচ বন্ধু বাড়িয়ে তোলে এবং বৈধ বন্ধুদের কে আরো আনন্দ দেয় । এবং বৈধ বন্ধুত্বের সাথে সাথে সম্মান ও সম্প্রীতি আরও বাড়িয়ে দেয় । হ্যাঁ  অবৈধ নষ্ট , নোংরা ,যৌনলিপ্সু বন্ধুত্বে  বিবাহ অবশ্যই কষা চপেটাঘাত করে  । আর হাজার হাজার ভালো বন্ধু,  ভালো সাহায্যকারী বিবাহিতদের পাশে এসে দাঁড়ায় আর জীবনকে  আরো সমৃদ্ধ আরো প্রসারিত ও  আনন্দময় করে তোলে।  এবংমানসিকভাবে অসুস্থ  অবৈধ বন্ধু- প্রিয় তরুণ-তরুণীদেরকেও  বিবাহে আগ্রহী করে তোলে।  অবশ্যই বিবাহিত জীবন দুজনের মিল বন্ধনের মাধ্যমে অনেক স্বজন ও নতুন নতুন পূন্যময়  বন্ধু  তৈরিতে ব্যাপক ও  বাস্তব ভূমিকা রাখে । যারা পথহারা নাবিক বন্ধু হারানোর ভয় করেন তারা ভন্ডামি যুক্ত ব্লগ ,অযুক্তিক লেখাগুলো পড়া থেকে বিরত থাকুন এবং  দ্রুত বিবাহ করুন । দেখবেন আপনার  বন্ধু বাড়তেই থাকছে। 

৪. সীমাবদ্ধ যৌনজীবনের  ভীতি ? 

 বিবাহের কারণে কখনোই যৌনজীবন সীমাবদ্ধ হয় না বরং মানুষের মিলন চাহিদার আনন্দময়, স্বাস্থ্যসম্মত ,সুন্দর ও  সুখময় যৌন মিলনের সুক্ষেত্র তৈরি হয়।  অবৈধ মিলন সমাজের কাছে যেমন পঁচা দুর্গন্ধময়  তেমনি নিজের কাছেও ভীতিমূলক তাই এ কথা বলা বড়ই  বোকামি যে বিবাহিত জীবন  মিলনকে সীমাবদ্ধ করে দেয় । যারা অবৈধ কলুষিত সংস্কৃতির  বেড়াজালে আবদ্ধ তারাই এসকল অনর্থক ভয়গুলো তরুণ-তরুণীদের মাঝে ছড়িয়ে বিবাহ পরবর্তী সুন্দর এবং পবিত্র মিলনসুখী  জীবনকে ভীতিমূলক করার অপচেষ্টা চালায়।যা   নিতান্তই অস্বস্তিকর এবং অপূরণীয় ক্ষতিকর।  বিবাহের বাইরে যৌনাচার বড় বড় রোগের কারণ ।  মৃত্যু ভিন্ন যে রোগের কোনো  চিকিৎসা থাকে না।  তাই বিবাহকে সীমাবদ্ধ যৌনজীবনের ভীতিমূলক  অধ্যায় মনে না করে , স্বাধীন ও আনন্দময়,  বৈধ ও  সুস্বাস্থ্য আনয়নকারী জীবন মনে করুন। 

৫. সাংসারিক জীবনে খরচ বেড়ে যাওয়ার ভয় ? 

 যারা সংসার করছেন আর যারা সংসার করছেন না বা যারা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর  হয়ে দিনকে-দিন সময় পার করছেন বিবাহ করছেন না।  তারাও জানেন যে বিবাহিত জীবন খরচ বাড়ায় না বরং ইনকাম বাড়ায়। অবিবাহিত জীবনের বেশিরভাগ খরচই  হয় হিসেব ছাড়া ।  অন্যদিকে  বিবাহিত জীবনে যা খরচ করবেন তার একটি হিসাব থাকে । কিন্তু বিবাহ অ-প্রিয় মানুষগুলো যেভাবে বিভিন্ন রাস্তায় খরচ করেন তাদের কোনো খোঁজ খবর ও  হিসাব থাকেনা; বরংচ তাদের  আরও ঋণ করা লাগে।   তাই  সংসার জীবনে খরচ বেড়ে যায় একথা বলার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই । সংসার জীবন খরচের হিসাব রেখে  খরচ কে নিয়ন্ত্রণ করে আনন্দময় জীবন উপহার দেয়। 

উপসংহার।

অনর্থক অভিনয়যুক্ত ভয় ছেড়ে সংসারিক জীবনে আসুন। সংসার করুন, বিবাহ করুন সন্তান-সন্ততি নিয়ে  বৈধ পথে সংসারী  হউন , সুখী আনন্দময়, মধুময় সঙ্গী , সন্তান সন্ততি ও আপনার পিতা মাতা আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব দের নিয়ে বিবাহিত জীবন উপভোগ করুাই।  এ জীবন ভীতির নয় ,এজীবন  আনন্দের, সুখের ও কল্যাণের।