অন্তর্মুখী বনাম বহির্মুখী

কোন ব্যক্তির চিন্তা- ভাবনা,চাল-চলন,  অভ্যাসের সমন্বয়ে তার ব্যাক্তিত্ব গড়ে উঠে। সমাজের প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তারপরেও তাদেরকে সাধারণত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

  • Introvert বা অন্তর্মুখী
  • Extrovert বা বহির্মুখী




Introvert বা অন্তর্মুখী : এই ধরনের মানুষেরা সাধারণত শান্ত, লাজুক স্বভাবের হয়। এরা নিজস্ব সময় কাটাতে পছন্দ করে এবং হইচই, পার্টি এড়িয়ে চলে।এরা খুব ভাল স্রোতা হয় ও খুব ভেবে চিন্তে কথা বলে। কোন মানুষকে ফোন দেয়ার পরিবর্তে মেইল বা মেসেজ দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে। এরা কথা কম কাজ বেশি, এই নীতিতে বিশ্বাসী।

  • Extrovert বা বহির্মুখী : এরা অত্যন্ত সামাজিক, চঞ্চল ও বাকপটু। এরা একাকী থাকতে পারেনা। এরা যোগাযোগ এ খুবই দক্ষ।এরা পার্টি, হইচই করতে পছন্দ করে।  সারাক্ষন মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে চায়। মানুষের কাছে এরা ব্যাপক জনপ্রিয় থাকে।

জীবনসঙ্গী হিসাবে কে কেমন:   

"মন শুধু মন ছুয়েছে,সে তো মুখ খোলেনি!" এই গান অন্তর্মুখী মানুষের ক্ষেত্রে একেবারেই মিলে যায়। অন্তর্মুখী মানুষ সবার সাথে তার মনের ভাব সহজে প্রকাশ করেনা। তাই বলে তারা কারও সাথে মিশতে পারেনা এমন কিন্তু নয়। মানুষের সাথে তাদের মিশতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে কিন্তু যার সাথে ভালো সম্পর্ক হয় তা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়। যেহেতু এরা যা বলে তা শুধু কথার কথা নয়, প্রকৃত অর্থেই বলে তাই এরা জীবনসঙ্গী হিসেবে সাধারণত বিশ্বস্ত হয়।

অন্তর্মুখী  মানুষদের নেগেটিভ দিক হচ্ছে যে এরা 

যেহেতু নিজের সাথে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করে তাই অনেকে এদের অহংকারী ভাবেন।সবাই যখন ছুটিতে শহরের বাইরে ঘুরতে যায় তখন এদের ইচ্ছা করে বাসায় বসে বই পড়ে সময় কাটাতে।তাই আশেপাশের মানুষ এর কাছে এরা অসামাজিক আখ্যা পেয়ে থাকেন।

অপরদিকে বহির্মুখী মানুষ খুব সহজেই অন্যের সামনে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। এরা মনে কিছু চেপে রাখে না। সহজেই মানুষের সাথে মিশতে পারে।তুলনামূলক কম সেন্সিটিভ হয়। যেকোন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।এরা খুব বন্ধুবৎসল হয়। ঘুরে বেড়িয়ে, মজা করে জীবনটাকে উপভোগ করে।

এদের এতো সব পজিটিভ সাইডের পাশে কিছু নেগেটিভ সাইড ও আছে। এরা যেহেতু বন্ধু বান্ধব নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে তাই ফ্যামিলি এর প্রতি বেশি সময় দেয় না।  এরা ভাবনা চিন্তা না করেই হুট করে কোন কথা বলে বা সিধান্ত নিয়ে নেয়। এর ফলে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।

 যদি স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই বহির্মুখী বা অন্তর্মুখী হয় তাহলে পরস্পরকে সহজে বুঝতে পারে।  কিন্তু একজন বিপরীত স্বভাবের হলে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে পারস্পরিক বৈপরিত্যগুলো অতিক্রম করা যাই। একজনের দুর্বলতাগুলো আরেকজনের ঢাকতে পাড়ার নামই তো দাম্পত্য!!